ইলেকট্রিক স্কুটারগুলো যাতায়াতের জন্য নতুন একটা মাধ্যম এবং এগুলোর মাধ্যমে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। আপনি এটাতে চড়ে শপিং করতে যেতে পারেন, সিনেমা দেখতে যেতে পারেন আবার আপনার শহরকে ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন এবং নতুন নতুন জায়গাতেও যেতে পারেন। এই নতুন পরিবহন গুলো শুধু সহজ এবং মজার না বরং এগুলো পরিবেশবান্ধব। এটা থেকে কোন কার্বন নিঃসরণ হয় না তাই ইলেকট্রিক স্কুটারগুলো পরিবেশের জন্য হুমকি নয়।
যাইহোক, যখন আপনি ইলেকট্রিক স্কুটারে যাতায়াত করার চিন্তা করবেন তখন আপনার মনে কতগুলো প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে পারে। প্রশ্নগুলো এরকম যে, ইলেকট্রিক স্কুটার গুলো রাস্তায় চালানো কি লিগ্যাল হতে পারে? ইলেকট্রিক স্কুটার কি হাঁটার রাস্তায় চালানো যাবে? যদিও বাংলাদেশে হাঁটার জন্য আলাদা কোনো লেন নেই। ইলেকট্রিক স্কুটার চালাতে কি ড্রাইভিং লাইসেন্স এর দরকার হয় ইত্যাদি। এগুলো কিন্তু অবান্তর কোন প্রশ্ন নয়। বর্তমানে আমরা রাস্তায় বিভিন্ন ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল চালাতে দেখি এগুলো লাইসেন্স ছাড়া চালানো যায় না। চলুন তাহলে দেখে নেই ইলেকট্রিক স্কুটার চালাতে কি ড্রাইভিং লাইসেন্স দরকার হয়? শীর্ষক আর্টিকেলটি।
প্রথমেই জেনে নেই ইলেকট্রিক স্কুটার কি?
ইলেকট্রিক স্কুটার হলো ম্যানুয়াল স্কুটার এর মত দুই চাকা বিশিষ্ট কিন্তু ইলেকট্রিক স্কুটার এ মোটর লাগানো থাকে। ১৯৮৫ সালে প্রথম ইলেকট্রিক স্কুটার তৈরি করা হয়েছিল। তারপর কয়েক বছরের মধ্যেই এটি সারা বিশ্বের দেশগুলোতে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অন্যান্য পরিবহনগুলোর চেয়ে ইলেকট্রিক স্কুটার গুলো অনেক ছোট হয়। আমরা প্রতিনিয়ত যে বাইসাইকেল গুলো দেখি তার চেয়ে ছোট এবং ওজনে হালকা হয়ে থাকে। এগুলো ভাঁজ করে রাখা যায়। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এবং সুরক্ষার জন্য কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলা উচিত।
বিশ্বের অন্যান্য দেশে ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যবহারের নিয়মঃ
বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যবহারের বিভিন্ন নিয়ম আছে। কোন কোন দেশের রাজ্য অনুমতি দিলেও সে রাজ্যের শহর অনুমতি দেয় না ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যবহারের জন্য। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে শহর অনুমতি দিলেও কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় অনুমতি দেয় না যেমন, আমেরিকার টেক্সাসে, যদি ইলেকট্রিক স্কুটারের মোটর ৯০০ ওয়াটের হয় এবং এটা ম্যানুয়ালি ব্যবহার করা যায় তাহলে সেটা ঠিকঠাক হয়। সেখানে ইলেকট্রিক স্কুটার বাইক লেনে যে কোন স্পিডে চলতে পারে কিন্তু রাস্তায় এবং হাটার রাস্তায় ইলেকট্রিক স্কুটার গুলোর স্প্রিট ৩৫ এমপিএইচ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। আবার টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা নিয়ম আছে ইলেকট্রিক স্কুটার এবং বাইসাইকেল চালানোর জন্য।
ইউনাইটেড কিংডমে ইলেকট্রিক স্কুটারগুলো সাইকেল চলার রাস্তায় এবং বড় রাস্তায় চলাচল করতে দেয়া হয় না। সেখানে ইলেকট্রিক স্কুটার গুলো চালানোর জন্য কিছু লিগ্যাল নিয়ম মানতে হয়। সেখানে সবার আগে ব্যবহারকারীর সুরক্ষা কে প্রাধান্য দেয়া হয়।
আবার কিছু কিছু জায়গায় বয়সের সীমাবদ্ধতা দেয়া হয় ইলেকট্রিক স্কুটার চালানোর জন্য। যেমন ভারতে, বর্তমানে ১৬ থেকে ১৮ বছরের ছেলেমেয়েদের ইলেকট্রিক স্কুটার চালানোর জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স চাওয়া হয় এবং সেখানে স্প্রিড লিমিটেশন ৭০ এমপিএইচ।
বাংলাদেশ ইলেকট্রিক স্কুটার চালানোর জন্য কি ড্রাইভিং লাইসেন্স দরকার হয়?
এতক্ষণ বিশ্বের অন্যান্য দেশে ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যবহারের নিয়ম পড়ে মনে হতে পারে বাংলাদেশেও কি ইলেকট্রিক স্কুটার চালানোর জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স দরকার হয়? আপনাদের কনফিউশন দূর করার জন্য বলছি যে, বাংলাদেশে যেহেতু ইলেকট্রিক স্কুটার গুলো একেবারেই নতুন এবং বেশিরভাগ লোকজন এখন পর্যন্ত এগুলোর ব্যবহার জানে না তাই এগুলো চালানোর জন্য আপাতত কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স এর দরকার নেই। সাধারণ বাইসাইকেল যেমনভাবে ব্যবহার করে যেমন আপনারা জানেন বাইসাইকেল এর জন্য লাইসেন্স এর দরকার হয় না তেমনভাবে ইলেকট্রিক স্কুটার এর জন্য কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স এর দরকার নেই। তবে যেহেতু ইলেকট্রিক স্কুটারগুলো বাইসাইকেল এর চেয়েও দ্রুত চালানো যায় তাই আমি বলব যে, পার্সোনাল সেফটির জন্য হেলমেট পরিধান করা এবং ঠিকঠাক ভাবে চালানো শিখে তারপর রাস্তায় চলাচল করা।
সব শেষের কথা, ইলেকট্রিক স্কুটারগুলো চালানো অনেক আনন্দদায়ক এবং এগুলো কাজেও বটে। এগুলো ব্যবহার করা অনেক সহজ এবং পরিবেশবান্ধব। ইলেকট্রিক স্কুটারগুলো চালানোর ক্ষেত্রে পথচারীদের দিকে খেয়াল রাখা জরুরী। রাস্তায় চলার জন্য ট্রাফিক রুলস মানা নিরাপদ। নিজের সুরক্ষার জিনিসপত্র নিজের কাছে রেখে ইলেকট্রিক স্কুটা্রে চেপে বেরিয়ে পড়তে পারেন নতুন জায়গার সন্ধানে, বন্ধুদের সাথে ভ্রমণে বের হতে পারেন। ইলেকট্রিক স্কুটার চালানোর মজা অনুভব করতে পারেন নিজের মতো করে। সবার জন্য রইল শুভকামনা।